আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত সিরিয়া। গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি বেশ কিছুকাল শান্ত থাকার পর গত কয়েকদিন ধরে গৃহযুদ্ধের দাবানলে আবারও পুড়তে শুরু করেছে পুরো দেশ। নিহতের সংখ্যও বেড়েই চলেছে। বুধবার শুরু হওয়া বিদ্রোহীদের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে দেশটির ঐতিহাসিক ও বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর অধিকাংশের নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে বিদ্রোহীরা।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এসওএইচআর জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা শহরটির অর্ধেকেরও বেশি অংশের দখল নিয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটিই সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের বড় পদক্ষেপ।
২০১৬ সালে বিদ্রোহীদের ওই শহর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলো প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারি বাহিনী। এরপর থেকে এটিই বিদ্রোহীদের বড় লড়াই।
এসওএইচআর আরও জানায়, ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলো আলেপ্পোর অধিকাংশ অংশ, সরকারি দপ্তর ও কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।’ এইচটিএস মূলত আল-কায়েদার সাবেক সিরিয়া শাখার নেতৃত্বাধীন একটি জোট।
এদিকে, বিদ্রোহী বাহিনীকে দমনে ২০১৬ সালের পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাশিয়া প্রথমবারের মতো আলেপ্পোর বিভিন্ন অংশে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, বুধবার শুরু হওয়া অভিযান ক্রমশ বাড়ছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক। এই অভিযান গত কয়েক বছরের মধ্যে সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় আক্রমণ। বিদ্রোহীরা ২০১৬ সালে সরকারি বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে আলেপ্পো থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর এবারই প্রথম শহরটিতে প্রবেশ করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলেপ্পোর বিমানবন্দর এবং শহরে প্রবেশের সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, শনিবার ভোরে বিদ্রোহীরা শহরের বেশিরভাগ অংশ কোনো বড় প্রতিরোধ ছাড়াই দখল করেছে।
সংস্থাটির এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ‘সরকারি বাহিনী পিছু হটায় কোনো লড়াই হয়নি।’
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের মুখপাত্র বলেছেন, ‘নগর পরিষদ, পুলিশ স্টেশন, গোয়েন্দা অফিস সব খালি। এমনটা আগে কখনো ঘটেনি।’
আপনার মতামত লিখুন :